শুক্রবার, ০১ নভেম্বর ২০২৪, ১০:২৫ পূর্বাহ্ন
মানবপাচারসহ রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট বানিয়ে দিয়ে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন আজিজিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল এজেন্সির মালিক আতিকুর রহমান।
বিদেশে পাচার করেছেন কোটি কোটি টাকা। অস্ট্রেলিয়ায় স্ত্রী ও নিজের নামে কিনেছেন প্লট, বাড়ি। ঢাকায়ও আছে বিপুল সম্পদ। বিদেশে অর্থ পাচারের দায়ে আতিকুর দম্পতির বিরুদ্ধে মামলা করেছে র্যাব।
পঁচানব্বইয়ে কক্সবাজারের একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরি করতেন আতিকুর রহমান। সেখানে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে চাকরি যায় তার। তারপর ২০০১ এ চলে আসেন ঢাকায়। খোলেন আজিজিয়া ইন্টারন্যাশনাল ট্রাভেল এজেন্সি। তখন থেকেই মানবপাচার, বিদেশে শ্রমিক পাঠানোর নামে প্রতারণা, ভুয়া নাম-ঠিকানা দিয়ে জন্মনিবন্ধন সনদ তৈরি করে আসছেন, রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট বানিয়ে দেয়াসহ নানা অপকর্মেও জড়িয়ে পড়েন আতিকুর।
র্যাব ২ এর কোম্পানি কমান্ডার মুহম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, “রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পের দালালদের সাথে তার একটি ব্রিজ হয়, সেই দালালরা তার কাছে এসে বলে এই রোহিঙ্গাদের পাস্পোর্ট লাগবে। আমাদের কাছে যে তথ্য সেটা হলো, ৩ থেকে ৫ লাখ টাকায় একেকজন রোহিঙ্গাকে পাস্পোর্ট করে দেয় সে। তিনি মানব পাচারের সাথে জড়িত। ২০১৪-১৫ সালে যে পিক সময়টা, সেখানে সে অ্যাক্টিভলি জড়িত ছিলেন।’
র্যাব-এর তদন্তে আতিকুর দম্পতির বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদের হদিস মিলেছে। গেল দুই বছরে অস্ট্রেলিয়ায় রশিদ রাশেদ নামে এক ব্যক্তির কাছে অবৈধভাবে দশ লাখেরও বেশি অস্ট্রেলিয়ান ডলার পাঠিয়েছেন আতিকুর। ওই অর্থ দিয়ে দেশটির নিউ সাউথ ওয়েলসের ল্যাকেম্বা স্ট্রিটে বাড়ি কেনেন রশিদ রাশেদ। পরে বাড়িটি আতিকুর ও তার স্ত্রী মেহেরুন্নেছাকে উইল করে দেন তিনি। পাশাপাশি ভিক্টোরিয়ার গিজবর্নের ওয়ালাবি রানে জমি কিনেছেন আতিকুর। এছাড়াও, এএনজেড ব্যাংকে স্বামী-স্ত্রী দুজনের নামেই রয়েছে ভিসা কার্ড।
মুহম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, “অস্ট্রেলিয়ায় যে টাকা তিনি পাঠিয়েছেন সেটি বৈধ উপায়ে পাঠাননি। কারণ কোনো ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকাটা যায়নি। সরকারকেও নোটিস করেননি এবং তার আয়কর বিবরণীতেও অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকের বিষয়টি উল্লেখ করেননি।”
ঢাকায়ও আতিকুর দম্পতির বিপুল সম্পদের খোঁজ মিলেছে। ইসলামী ব্যাংকে আছে ৪৫ লাখ টাকার এফডিআর। বিভিন্ন স্থানে আছে পাঁচটি ফ্ল্যাট, রাজারবাগে আছে স্ত্রীর নামে জমি, সিপিডিএল প্যারাগন শপিং মলে আছে দোকান।
র্যাব ২ এর কোম্পানি কমান্ডার মুহম্মদ মহিউদ্দিন ফারুকী জানান, আতিকুর রহমানের ব্যাংক স্টেটমেন্টের সাথে তার আয়কর রিটার্ণ কোনোভাবেই যায় না। তিনি যে ট্যাক্স পে করেন তার সাথে উনার সম্পদের যে বিবরণী তাও ঠিক নেই।
আতিকুর এবং তার পলাতক স্ত্রী মেহেরুন্নেছার বিরুদ্ধে মুদ্রাপাচার আইনের মামলাটি তদন্ত শুরু করতে যাচ্ছে সিআইডি।
সূত্র : ডিবিসি নিউজ